ঢাকা , শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

অস্থিরতা সবজি বাজারে

মানিকগঞ্জে সবজির বাজার অস্থিতিশীল

নিজেস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় : ২৬-১০-২০২৪ ০৫:২৮:৩০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৬-১০-২০২৪ ০৫:২৮:৩০ অপরাহ্ন
মানিকগঞ্জে সবজির বাজার অস্থিতিশীল
এ্যাড,শফিকুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে সবজির দাম পাগলা ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজীর বাজার কমবেশি বেড়েছে। অধিকাংশ সবজী ১০০ টাকা কেজির কাছাকাছি। কাচা মরিচ ৫শত থেকে নেমে ৪শ টাকা কেজি হলেও, বেড়েছে পেয়াজ, ডিম, মাছ ও সবজীর দাম। উপযুক্ত বাজার মনিটরিং দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সঙ্কট স্বৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অ-স্বাভাবিক অধিক মূল্যে বিক্রি করছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা সদর সাটুরিয়া সাপ্তাহিক হাটের দিনে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বাজারে আসা ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, নিত্যপন্যসহ সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে নিম্মবৃত্ত মানুষের পক্ষে তা কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে। এক কেজি কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, টমেটো ২৮০টাকা, শিম ২২০টাকা, ধনে পাতা ৬০০টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা, কাকরোল, বেগুন, বাঁধাকপি, পটল ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছারা করলা ১২০ টাকা, কচুর লতি ১৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, এক হালি কাঁচকলা ৫০ টাকা, টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছারা ছোট সাইজের একটি দেশী লাউ ৮০ থেকে ১০০, ছোট এক মোটি লাউ শাক ৫০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজীর মধ্যে ৫০টাকা কেজির নীচে শুধু পেপে, তাও আবার ৪০টাকা কেজি। ফলে নি¤œ বৃত্তের মানুষ বিপাকে পড়ে দিশেহারা হয়ে গেছে। বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকারের বাস্তব মুখী পদক্ষেপ না থাকায় চরম ভাবে বিক্ষোব্ধ হচ্ছে সাধারন মানুষ। নজরদারী কম হওয়ার কারণে বিক্রেতারা ইচ্ছামতো সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য চড়া দামে বিক্রি করছে। সাটুরিয়া সদর বাজার সবজি বিক্রেতা আবুর কাশেম বলেন, সবজী চাষে বিখ্যাত জেলার সাটুরিয়া উপজেলা। রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারের সবজী আরদে বিভিন্ন সবজীর বড় অংশ আমদানী হয় সাটুরিয়া থেকে। অসময়ে অতি বৃষ্টিসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াার কারণে সবজি আবাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবজী ও মরিচের আবাদী জমিতে বৃষ্টি এবং বর্ষার পানি জমে গাছ মড়ে গেছে। এ জন্যে বিভিন্ন আরদে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। তাই চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম বলে চড়া দামে সংগ্রহ করে উচ্চ মুল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে চাল সহ নিত্যপনের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ার কারনে সাধারন মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। তাদের আয় বাড়েনি অথচ ক্রমেই দ্রব্যমূল্যের দাম পাগলা ঘোড়ার মতো বেড়ে চলেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা, আরতদাররা কৃত্তিম সংকট তৈরী করে ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারন করছেন বলে অভিযোগ তাদের। সবজি চাষী নুরুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু দিনের ভেতরে বাজারে নতুন আবাদের সবজি সরবরাহ বাড়বে তখন দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। সবজি বাজারে ক্রেতা আ.রৌফ জানান, যা বেতন পান তা দিয়ে মাসের ১৫দিনও চলতে পারেন না। দ্রব্য মুল্যের সাথে বেতন তো আর বাড়েনি। যেভাবে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে নিম্নবৃত্ত ও স্বল্প আয়ের পরিবারের মানুষের জন্যে যেন “মড়ার উপর খড়ার ঘা। তাদের পক্ষে এত চড়াদামের সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গ্রাম এলাকায় মরিচ ডলে ভাত খাওয়ার প্রবনতা রয়েছে আজও। কিন্তু বিধি বাম, সেই মরিচের বাজারে যেন আগুন ধরেছে। ভ্যান চালক আবুল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, মাছ, গোশত ও ডিম কেনা আগে থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখন একটু সবজি দিয়ে কোনোমতে দুইটা ভাত খাই তাও বন্ধ হওয়ার পথে। এই দুঃখ কষ্টের কথা কারে কমু। গণমাধ্যমকর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে এবং সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে বাজার দর সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে না। ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মো.রুমেল জানান, বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োাজনীয় দ্রব্যমূল্যর দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SM Sohel

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ