বাংলাদেশে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত ১১ দফার দ্রুত বাস্তবায়ন হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধাও (জিএসপি) পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
জিএসপি সুবিধা পেতে শ্রম অধিকারের ১১ দফার বাস্তবায়ন চায় যুক্তরাষ্ট্র
নিজেস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় :
২৪-১১-২০২৪ ১০:১৯:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৪-১১-২০২৪ ১০:১৯:২৮ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত ১১ দফার দ্রুত বাস্তবায়ন হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধাও (জিএসপি) পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাকায় সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক এক প্রতিনিধিদল সঙ্গে বৈঠক শেষে এমন আশাবাদের কথা জানান তিনি।
২০ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আন্তর্জাতিক শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম ফে রদ্রিগেজ। এ সময় বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কত দ্রুত শ্রম অধিকারের এই ১১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারি, সেটা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। এগুলো করতে পারলে আমরা অবশ্যই জিএসপি সুবিধা পাব।’
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি আলোচনায় ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকারের বিষয়ে জোর দেয়। এসব অধিকার এখনো আছে, তবে বিপরীতে রয়েছে নানা শর্ত। যুক্তরাষ্ট্র চায় শর্তগুলো শিথিল করা হোক। অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব দফা বাস্তবায়নে প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলের একটি দল বাংলাদেশের শ্রম অধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি কর্মপরিকল্পনা জানিয়ে যায়। ওই কর্মপরিকল্পনায় মোটাদাগে ১১টি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়।
১১টি বিষয়ের প্রথমটিই হচ্ছে ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, শ্রমিক ও শ্রম অধিকারকর্মীদের যারা নিপীড়ন করেন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালান, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এরপরই রয়েছে শ্রমিকনেতা ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কাজ করে, এমন কারখানার মালিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনা।
এ ছাড়া রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলো যে মানের অধিকার ভোগ করে, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রম আইন ও বিদ্যমান শ্রমবিধি সংশোধন। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর (ইপিজেড) শ্রমিকেরা যাতে পুরোদমে ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
আরও যেসব বিষয় রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) আইনের ৩৪ নম্বর ধারা সংশোধন ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় (এসইজেড) সেটির প্রয়োগ এবং সেখানকার শ্রমিকেরা যাতে সংগঠিত হতে পারেন ও সম্মিলিতভাবে দর-কষাকষিতে সক্ষম হন, তা নিশ্চিত করা; ট্রেড ইউনিয়ন করার আবেদনের প্রক্রিয়া ৫৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা; শ্রম অধিদপ্তরের মাধ্যমে তার বিদ্যমান অনলাইন নিবন্ধন পোর্টালে অপেক্ষমাণ থাকা সব আবেদনের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ; বার্ষিক বাজেটের মাধ্যমে শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ ও এ জন্য তহবিল বরাদ্দ দেয়া; আরও শ্রম পরিদর্শকের পদ অনুমোদন এবং নিবন্ধন বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত করার অভ্যাস বন্ধ করা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: ৫০ জেলায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ১৩ লাখ টাকা জরিমানা
বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘এসব বিষয়ে প্রধানত কাজ করছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। শ্রমিকের জীবনযাপন, মানোন্নয়ন ও ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে। আমরা সবাই এক লাইনেই কাজ করছি। আমরা আমাদের দিক থেকে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়ে তাগিদ দিয়েছি। তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন। তারা আমাদের শ্রমিকদের অধিকার ও ন্যূনতম মজুরিসহ অন্যান্য বিষয়ে নজর দিতে বলেছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যে প্রায় ১৬ শতাংশ শুল্ক দিয়ে পণ্য রফতানি করতে হয়, এ বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘কথা বলেছি। জিএসপি সুবিধা থাকলে এটা দিতে হতো না। বলেছি, জিএসপি সুবিধায় আমরা থাকতে চাই। শুল্ক ও কোটামুক্ত পণ্য রপ্তানির যে সুবিধা আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পাচ্ছি, সেটা আমরা সব জায়গায় চাচ্ছি। তাদেরও বলেছি। কিন্তু তারা সেই লাইনে কোনো কথা বলেননি।’
নিউজটি আপডেট করেছেন : Voice Protidin Desk
কমেন্ট বক্স