রাতভর র্যাগিংয়ে পবিপ্রবির তিন শিক্ষার্থী হাসপাতালে, অভিযুক্ত সাত
নিজেস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় :
২৪-১১-২০২৪ ১০:৪৪:০৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৪-১১-২০২৪ ১০:৪৪:০৭ অপরাহ্ন
ছবি:সংগৃহীত
পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিলেও সেখানেই রাতভর র্যাগিংয়ে তিন শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে সাত শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার দিনগত রাত আড়াইটায় পবিপ্রবির এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় হলে অবস্থান করা স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪সেশন) শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হন।
তারা জানান, শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেয়া হয়। র্যাগিং চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়াও অমানবিক নির্যাতনের কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত বারোটায় ইমিডিয়েট সিনিয়ররা আমাদের গণরুমে এসে আমাদের সকলের ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। আমাদেরকে কান ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক নিয়ম বলেন। সিগারেটের ধোয়ায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে গণরুমে। এছাড়াও আমাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।এসময় খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী প্রক্টর মো. আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গণরুমে ঢুকে র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত দুইজনকে কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেন। পরে ক্যান্টিনে গিয়ে আরও চারজনকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ২০২২-২৩ সেশনের সাতজন শিক্ষার্থী এ কাজে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন হওয়ায় রাতেই তাদেরকে পবিপ্রবির হেলথ কেয়ারের কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রাতেই পবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, এ পরিস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। উক্ত ঘটনার সাথে যে বা যারা যুক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি যেন পরবর্তীতে আর না ঘটে এজন্য পবিপ্রবি প্রশাসন আরও তৎপর হবে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।রোববার সকালে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিয়ে সর্বোচ্চ সু-চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা অভিযুক্ত সাত শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের দায়ে আজই হল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সাথে সভা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তাদের সুপারিশক্রমে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদেরকে একাডেমিকসহ অধিকতর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Voice Protidin Desk
কমেন্ট বক্স