ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫ , ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

​রমনায় র‍্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি; মাইক্রোবাসসহ সংঘবদ্ধ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার

নিজেস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় : ১৪-১২-২০২৪ ০৮:৫৮:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৪-১২-২০২৪ ০৮:৫৮:১১ অপরাহ্ন
​রমনায় র‍্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি; মাইক্রোবাসসহ সংঘবদ্ধ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার ছবি:ভয়েস প্রতিদিন
রাজধানীর রমনার কাকরাইল মোড় এলাকায় র‍্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় মাইক্রোবাস ও মোবাইলফোনসহ সংঘবদ্ধ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির রমনা মডেল থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। মোঃ সাজ্জাদ হোসেন (৩৫), ২। মোঃ কবির হোসেন (৫০), ৩। মোঃ শরিফ (২৫), ৪। মোঃ মনির হোসেন (৪০) ও ৫। মোঃ হাবিবুর খন্দকার (৩৮)। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও আটটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়।

রমনা মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, ডেমরার মাতুয়াইলের ট্রাসমি কোম্পানি লিঃ এর ডিএমডি ভিকটিম সাইফুল ইসলাম (৩৮) গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরের পর তাঁতিবাজারের রামের গদি নামক স্বর্ণালংকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ ২৬ লক্ষ ১২ হাজার টাকা একটি স্কুল ব্যাগের ভিতরে নিয়ে বাড্ডার বাসায় যাওয়ার জন্য বংশাল চৌরাস্তা থেকে প্রচেষ্টা বাসে ওঠেন। বিকাল আনুমানিক ৪:২৫ ঘটিকায় বাসটি রমনার কাকরাইল মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে পড়লে হঠাৎ ১০/১২ জন লোক ওই বাসে উঠে নিজেদেরকে র‍্যাবের সদস্য পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে একজন ‘র‍্যাব’ লেখা জ্যাকেট পরে ছিল এবং তার কাছে  হ্যান্ডকাফ ও ওয়্যারলেস সেট ছিল। তারা যাত্রীদের বলে, এই গাড়িতে মামলার আসামি রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ভিকটিম সাইফুল ইসলামকে দেখিয়ে দিলে অন্যরা তাকে ধরে জোরপূর্বক টানা হেঁচড়া করে বাস থেকে নামিয়ে তাদের ব্যবহৃত একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে উঠায়। মাইক্রোবাসের মধ্যে তারা ভিকটিম মোঃ সাইফুল ইসলামের দুই হাত পিছনে নিয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার সাথে থাকা ২৬ লক্ষ ১২ হাজার টাকা, তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগসহ ১০ হাজার টাকা, হাত ঘড়ি, প্যান্টে পরিহিত বেল্ট ছিনিয়ে নিয়ে দুই হাত ও চোখ বেঁধে ডেমরা এলাকার রাস্তায় ফেলে দেয়। এ ঘটনায় গত ১১ ডিসেম্বর ভিকটিম মোঃ সাইফুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি ডাকাতির মামলা রুজু হয়।

থানা  সূত্রে আরো জানা যায়, তদন্তাধীন এ মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৪) সকাল  ১০:০০ ঘটিকায় রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার ইসিবি চত্বর এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয় এবং চালক মোঃ কবির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে গ্রেফতারকৃত কবির হোসেনের দেওয়া তথ্য মতে ওই দিন দুপুর ১:৪০ ঘটিকায় বংশালের আল রাজ্জাক হোটেলের সামনে অভিযান পরিচলনা করে সাজ্জাদ, শরিফ, মনির, হাবিবুর নামে আরো চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বাহিনীর সদস্যের মত চেইন অব কমান্ড মেনে ডাকাতি করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নেতৃত্বস্থানীয় সদস্যদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করে এবং সে অনুযায়ী ডাকাতির পর ভাগের টাকা নির্ধারণ করে। তাদের এই দলের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০-১২ জন যারা একেকটি ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন ধাপে কাজ করে থাকে।

গ্রেফতারকৃতদের রমনা মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত,অন্যান্য লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা ও ডাকাত দলের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Voice Protidin Desk

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ