অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর):-
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকায় বিভিন্ন
দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন খনিসংলগ্ন
বৈদ্যনাথপুর আংশিক, শিবকৃষ্ণপুর, মথুরাপুর, বাঁশপুকুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থরা।
চারদফা দাবিতে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কারনে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা।
তাদের ঘোষিত চারদফা দাবী পুরনের জন্য দুই মাসের আণ্টিমেটাম ঘোষনা করেছে,
অন্যথায় কঠিন আন্দোলন করার ঘোষনা দিয়েছে।বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির আহবানে আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে
১০টায় বড়পুকুরিয়া নতুন বাজার সংলগ্ন সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে একালার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রীরা একটি বিক্ষোভ
মিছিল বের করা হয়।
মিছিল শেষে বড়পুকুরিয়া নতুন বাজার সংলগ্ন সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. নুর মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি মাঃ সাইদুর রহমান, সাধারণ
সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোনতসির
সাগর, মো. আকতারুজ্জামান প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, খনিসংলগ্ন বৈদ্যনাথপুর আংশিক, শিবকৃষ্ণপুর, মথুরাপুর,
বাঁশপুকুর এই গ্রামগুলিতে প্রায় একহাজারের অধিক পরিবারে পাঁচ হাজার
মানুষের বসবাস। বর্তমানে এই পাঁচ হাজার অধিবাসি গভীর রাতে
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মাইন বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ও ভ‚কম্পনে বৈদ্যনাথপুর
আংশিক, শিবকৃষ্ণপুর, মথুরাপুর, বাঁশপুকুর গ্রামের গ্রামের বাড়িঘরে প্রায়ই ফাটল দেখা দিচ্ছে।
এতে আতঙ্কিত হয়ে অনেক সময় বাড়ির বাইরে
অবস্থান নিতে হয় বাসিন্দাদের।
একই সাথে চলাচলের জন্য ফুলবাড়ি থেকে
খয়েরপুকুর যাওয়া-আসার রাস্তার এমন অবস্থা যে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে
পড়েছে। বর্তমানে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আতংকে বসবাস করছি।
তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তা নামতে হয়েছে।
খনির কারণে সৃষ্ট এই কৃত্রিম ভ‚মিকম্পের আতংকে গত প্রায় ছয় বছরের
অধিক সময় ধরে গ্রাম গুলির বাড়ী-ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গ্রামের এমন কোন বাড়ী-ঘর নেই যে ফাটল ধরেনি।
তাছাড়া অনেক বাড়ী-ঘর বসবাসের অযোগ্য
পয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার খনি কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে
জানানো হলে; খনি কর্তৃপক্ষ বলেছেন তারা টিম গঠন করেছেন তদন্তে যাবে
কিন্তু এপর্যন্ত কোন টিম আসেনি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায়।
বক্তরা আরও বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলক‚পে ঠিকমতো পানি
উঠছে না। এতে পানি-সংকটে পড়েছেন এসব গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর জমি অধিগ্রহণ ও বাড়িঘর ফাটলের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের
দাবি জানান বক্তারা। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের খনিতে চাকরির
ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানানো হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আন্দোলন করলে
খনি কর্তৃপক্ষ লোক দেখানোভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো
ধরনের ক্ষতিপ‚রণ দেওয়া হয়নি। এসময় তারা বলেন, আগামী দুই মাস বা ৬০ দিনের
মধ্যে মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয় কর্মসূচি
থেকে।
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো.
সাইফুল ইসলাম সরকার জনান, বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের একটি টিম মাঠ
পর্যায়ে কাজ করছে।
একই সাথে বিষয়টি নিয়ে আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল
বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) চিঠি দিয়ে জানালে তাদের একটি টিম মাঠে কাজ করেছে।
আশা করছি সব মিলিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান
করা সম্ভব হবে।