দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা (এমপি) বুধবার শপথ গ্রহণ করবেন।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরীফুল আলম মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৯৮টি আসনে নির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়েছে, যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। সব ঠিক আছে। আজ (মঙ্গলবার গেজেট প্রকাশের অনুমোদন দিয়ে তা বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে নওগাঁ-২ আসনের প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে আসনটিতে ভোটের জন্য নতুন করে শিডিউলও দেয়া হয়েছে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর ময়মনসিংহের একটি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে, সেখানে ভোটগ্রহণ হবে ১৩ জানুয়ারি। এই দুটো আসন এখনও বাকি রয়েছে।’
এবারের নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়নি- যুক্তরাষ্ট্রের এমন বিবৃতির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ইসি আলমগীর বলেন, ‘আমাদের যে বক্তব্য সেটা গতকাল (সোমবার) প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন। এর বাইরে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। কে কী বলল- সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়; ওটা আমাদের কাজের মধ্যে পড়ে না।’
নির্বাচন অনুষ্টিত করে কমিশন সন্তুষ্ট কি না- প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট কোনটাই বলবো না। নিয়মমত যা যা করা দরকার, তা করেছি। অনিয়ম যেটা ছিল সেটা আমরা গ্রহণ করেনি, যেটা নিয়ম ছিল সেটা করেছি; সেভাবেই ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও খুব ভালো ছিল, সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে।’
সংসদ সচিবালয়ে শপথের প্রস্তুতি
এদিকে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা বুধবার শপথ গ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদের শপথকক্ষে এমপিদের শপথ পড়াবেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তবে জাতীয় পার্টির (জাপা) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলটির প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পাওয়া ১১ জন সংসদ সদস্য এদিন শপথ নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছিলেন জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
অবশ্য পরে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালানী জানান, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে। বুধবারই শপথ নিচ্ছেন জাপার সদস্যরা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় গত বছরের ১৫ নভেম্বর। সে অনুযায়ী, ভোট হয় ৭ জানুয়ারি। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও শরিক দলগুলো অংশ নিলেও অংশ নেয়নি বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোটের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে তারা।
এবারের নির্বাচনে ভোট হওয়া ২৯৮টি আসনের মধ্যে বেসরকারিভাবে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে ২২২টি, জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নৌকা প্রতীক নিয়ে ১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল নৌকা প্রতীক নিয়ে একটি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়লাভ করেছেন।
২৯৮ আসনে প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৯৬০ জন। নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের হার ছিল ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।