ভারতের ত্রিপুরার নাগরিক সাজ্জাত হোসেন। ২০০৩ সালে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হন। ওই বছরেরই ১৩ মার্চ তার বিরুদ্ধে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা হয়; পরদিন তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খাগড়াছড়ির প্রথম শ্রেণির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০০ টাকা জরিমানা করেন; একই সঙ্গে অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সব কারাবাস শেষে ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সাজ্জাত হোসেন মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার কথা থাকলেও গত ২১ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি জীবন কাটছে তার।
ত্রিপুরার সাজ্জাতের মতোই দশা বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি আরও ১৫৭ বিদেশি নাগরিকের। তাদের মধ্যে ভারতেরই ১৫০ জন। অবশিষ্ট ৭ জনের মধ্যে মিয়ানমারের ৫, পাকিস্তান ও নেপালের একজন করে।
গত ১৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানির পর সাজা ভোগ শেষেও বাংলাদেশের কারাগারে রয়েছেন এমন বিদেশিদের তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) কারা অধিদপ্তর ১৫৭ বিদেশি বন্দির এই তালিকা আদালতে দাখিল করে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে আগামী ১০ মার্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০৩ সালের ৮ জুলাই মিয়ানমারের কেউপ্রো থানার বাসিন্দা চিয়ঙ্গফ রাখাইন নামে এক ব্যক্তি বান্দারবানের আলীকদমে গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে ২ বছর কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। সে হিসাবে ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি সাজা ভোগ শেষ হলেও গত ১৮ বছরেও তার মুক্তি মেলেনি।
এদিকে ১ বছরের সাজা ভোগ শেষে ভারতের বিহারের গেবিন্দ বিহারী ১২ বছর, পশ্চিম বাংলার নদীয়ার তপন হরামী ১০ বছর, রায়পুরের রাজা কুমার ৯ বছর, গুজরাটের বুদ্ধি রাও ৬ বছর, মহারাষ্ট্রের সেবাজী ৯ বছর, কুচবিহারের সুরজ সিং ৮ বছর, পশ্চিম বাংলার দার্জিলিংয়ের ভবেষ চন্দ্র সিং ৭ বছর, বিহারের যতু জনম সরদার কারা ভোগ শেষে ১০ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এ ছাড়া ভারতের ভুপালের নাগরিক হরি বচ্চন ৬ মাসের সাজা ভোগ শেষ হওয়ার পর গত ১০ বছরেও মুক্তি মেলেনি। এ ছাড়া ভারতের কামরুপের মোহা. শাহ মাহমুদ কারা ভোগ শেষে ৬ বছর, পাটনার বাচুল মাঝি ৬ মাসের কারা ভোগ শেষে ১০ বছর ধরে কারাবন্দি রয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তানের নাগরিক সালমান হাফিজ ওরফে আব্দুর রহমান ২০০৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে ৫ বছর সাজা ভোগ শেষ করেও গত ১২ বছর ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া হাইথং নামে মিয়ানমারের এক নাগরিক সাজা ভোগের পর ১৩ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। নেপালের শংকর চাওলা নামে এক ব্যক্তির সাজা ভোগ শেষ হওয়ার পর ৮ বছর ধরে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন।
অন্যদিকে, অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ার পরও ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের আশিষ নামে এক ব্যক্তি বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া অন্যদের কারা ভোগের মেয়াদ শেষ হলেও ৫ বছর থেকে ৬ মাস ধরে তারা কারা জীবন কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত গণমাধ্যমে বলেন, কারা অধিদপ্তর থেকে ১৫৭ জনের নামসহ একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাদের সবার সাজা ভোগের মেয়াদ শেষ হলেও প্রত্যাবাসনের কাজটি সম্পন্ন হয়নি। আরেক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইন কর্মকর্তা বলেন, কী কী কারণে তাদের প্রত্যাবাসনের কাজটি সম্পন্ন হয়নি তা কারা অধিদপ্তরের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। তবে তারা আরেকটি প্রতিবেদন দেবেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, এসব নাগরিক যে দেশের সেসব দেশ উদ্যোগ নিলে তাদের মুক্তির প্রক্রিয়া সহজ হতো। হয়তো তা এখানে করা হয়নি। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, তারা যে দেশের নাগরিক, সেই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খাগড়াছড়ির প্রথম শ্রেণির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০০ টাকা জরিমানা করেন; একই সঙ্গে অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সব কারাবাস শেষে ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সাজ্জাত হোসেন মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার কথা থাকলেও গত ২১ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি জীবন কাটছে তার।
ত্রিপুরার সাজ্জাতের মতোই দশা বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি আরও ১৫৭ বিদেশি নাগরিকের। তাদের মধ্যে ভারতেরই ১৫০ জন। অবশিষ্ট ৭ জনের মধ্যে মিয়ানমারের ৫, পাকিস্তান ও নেপালের একজন করে।
গত ১৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানির পর সাজা ভোগ শেষেও বাংলাদেশের কারাগারে রয়েছেন এমন বিদেশিদের তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) কারা অধিদপ্তর ১৫৭ বিদেশি বন্দির এই তালিকা আদালতে দাখিল করে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে আগামী ১০ মার্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০৩ সালের ৮ জুলাই মিয়ানমারের কেউপ্রো থানার বাসিন্দা চিয়ঙ্গফ রাখাইন নামে এক ব্যক্তি বান্দারবানের আলীকদমে গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে ২ বছর কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। সে হিসাবে ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি সাজা ভোগ শেষ হলেও গত ১৮ বছরেও তার মুক্তি মেলেনি।
এদিকে ১ বছরের সাজা ভোগ শেষে ভারতের বিহারের গেবিন্দ বিহারী ১২ বছর, পশ্চিম বাংলার নদীয়ার তপন হরামী ১০ বছর, রায়পুরের রাজা কুমার ৯ বছর, গুজরাটের বুদ্ধি রাও ৬ বছর, মহারাষ্ট্রের সেবাজী ৯ বছর, কুচবিহারের সুরজ সিং ৮ বছর, পশ্চিম বাংলার দার্জিলিংয়ের ভবেষ চন্দ্র সিং ৭ বছর, বিহারের যতু জনম সরদার কারা ভোগ শেষে ১০ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এ ছাড়া ভারতের ভুপালের নাগরিক হরি বচ্চন ৬ মাসের সাজা ভোগ শেষ হওয়ার পর গত ১০ বছরেও মুক্তি মেলেনি। এ ছাড়া ভারতের কামরুপের মোহা. শাহ মাহমুদ কারা ভোগ শেষে ৬ বছর, পাটনার বাচুল মাঝি ৬ মাসের কারা ভোগ শেষে ১০ বছর ধরে কারাবন্দি রয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তানের নাগরিক সালমান হাফিজ ওরফে আব্দুর রহমান ২০০৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে ৫ বছর সাজা ভোগ শেষ করেও গত ১২ বছর ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া হাইথং নামে মিয়ানমারের এক নাগরিক সাজা ভোগের পর ১৩ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। নেপালের শংকর চাওলা নামে এক ব্যক্তির সাজা ভোগ শেষ হওয়ার পর ৮ বছর ধরে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন।
অন্যদিকে, অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ার পরও ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের আশিষ নামে এক ব্যক্তি বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া অন্যদের কারা ভোগের মেয়াদ শেষ হলেও ৫ বছর থেকে ৬ মাস ধরে তারা কারা জীবন কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত গণমাধ্যমে বলেন, কারা অধিদপ্তর থেকে ১৫৭ জনের নামসহ একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাদের সবার সাজা ভোগের মেয়াদ শেষ হলেও প্রত্যাবাসনের কাজটি সম্পন্ন হয়নি। আরেক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইন কর্মকর্তা বলেন, কী কী কারণে তাদের প্রত্যাবাসনের কাজটি সম্পন্ন হয়নি তা কারা অধিদপ্তরের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। তবে তারা আরেকটি প্রতিবেদন দেবেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, এসব নাগরিক যে দেশের সেসব দেশ উদ্যোগ নিলে তাদের মুক্তির প্রক্রিয়া সহজ হতো। হয়তো তা এখানে করা হয়নি। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, তারা যে দেশের নাগরিক, সেই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।